Aguli 11-01-23: রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান তিনি। একাধারে মুখ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যের একজন প্রথিতযশা দন্ত চিকিৎসকও। পেশায় একজন বিশিষ্ট চিকিৎসক হিসেবে রাজ্যবাসীর কাছে সুনাম রয়েছে প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহার। তাই তো মুখ্যমন্ত্রীর গুরুদায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি চিকিৎসকের দায়িত্ব পালনেও পিছিয়ে থাকলেন না। নিজে উদ্যোগ নিয়ে পুরনো কর্মস্থল হাঁপানিয়াস্থিত ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে একটি ১০ বছরের নাবালক ছেলেকে জটিল অস্ত্রোপচার করালেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহার নেতৃত্বে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের টিম।
মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবাকে সাধারণ মানুষের আরো কাছে পৌঁছে দিতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিলেন প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীও তিনি। নিজেও একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক। তাই স্বাস্থ্য দপ্তরের উন্নয়নের জন্য অন্যতম অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে হাঁপানিয়াস্থিত ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন অত্যন্ত সুনামের সাথে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও পুরনো কর্মস্থল ভিজিট করেছেন। এই অবস্থায় ফের একবার পেশাগত দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে মঙ্গলবার পুরনো কর্মস্থল ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজে উপস্থিত হন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এবারের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল ১০ বছরের একজন শিশুর Oral Cystic Lesion অস্ত্রোপচার করা।
আর সেই অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহার নেতৃত্বে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের টিম। এদিন ফের একবার পুরনো মেজাজে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। চিকিৎসকদের নির্ধারিত গাউন পরিধান করে অস্ত্রোপচারে অংশ নেন তিনি। এরআগে তাঁকে পুষ্পস্তবক ও উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত জানান অন্যান্য চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীরা। পরবর্তী সময়ে অস্ত্রোপচার শেষে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের জানান, বেশ কিছুদিন পর হলেও পেশাগত দায়িত্ব পালনে তেমন কোন অসুবিধা হয়নি। পুরানো সহকর্মীদের উপস্থিতিতে সম্পূর্ণ আগের মতই মনে হয়েছে। তিনি আরো জানান, অস্ত্রোপচারের পর বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে শিশুটি। উল্লেখ্য, রাজধানী আগরতলার বাসিন্দা সুকান্ত ঘোষের ১০ বছরের ছেলে অকসিত ঘোষের অস্ত্রোপচার করেন মুখ্যমন্ত্রী। একদিন পর্যবেক্ষনে রাখার পর বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে শিশুটিকে। অপারেশনের সময় এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ছিলেন ডাঃ অমিতলাল গোস্বামী, পূজা দেবনাথ, ডেন্টাল সার্জারি এবং ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি বিভাগের রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তী, স্মিতা পাল, কাঞ্চন দাস, শর্মিষ্ঠা বণিক লেন এবং বেশালী সাহাও। অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগ থেকে অপারেশন থিয়েটারে ছিলেন কংচাই চৌধুরী, পারমিতা দাস এবং অদিতি ভট্টাচার্য।
প্রসঙ্গত, বিহারের পাটনা সরকারি ডেন্টাল কলেজ থেকে বিডিএস ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। পরবর্তীতে উত্তরপ্রদেশের কিং জর্জেস মেডিকেল কলেজ থেকে এমডিএস (অরাল্যান্ড মেক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি) ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। পেশাগত জীবনে অত্যন্ত সুনাম এবং দক্ষতার সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন তিনি। ছিলেন ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেন্টাল সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান। একজন সম্মানিত এবং গুণী চিকিৎসক হিসেবেও কর্মক্ষেত্রে সুবিশাল অবদান রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহার। এজন্য ইন্ডিয়ান ডেন্টাল এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে লাইভটাইম এচিভমেন্ট এওয়ার্ড এবং ডেন্টাল সার্জারিতে অসামান্য অবদানের জন্য ত্রিপুরা সরকারের পক্ষ থেকেও তাঁকে লাইভটাইম এচিভমেন্ট এওয়ার্ড সম্মানে সম্মানিত করা হয়। পেশাগত জীবনে অত্যন্ত সজ্জ্বন, সৎ, নিষ্ঠাবান ও আপাদমস্তক নিপাট ভদ্রলোক হিসেবেই রাজ্যের মানুষ তাঁকে চেনেন এবং জানেন। মানুষের সেবায় কর্মজীবনে কখনো আপোষ করেন নি তিনি।
এদিকে, ছেলের অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সুকান্ত ঘোষ। তিনি জানান, সামনে নির্বাচন থাকায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকেন, শ্বাস ফেলার সময়টুকু পর্যন্ত নেই উনার। এই ব্যস্ততার মধ্যেও মূল্যবান সময় বের করে আমার মত সাধারণ কার্যকর্তার ছেলের অস্ত্রোপচার করেছেন তিনি। এজন্য আমি ও আমার পরিবার উনার প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকবো।