Tripura 13 March 2024: গত ১০ই মার্চ, কেন্দ্রীয় সরকার সারাদেশে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ক্যা (Citizenship Amandment Act) কার্যকরী করার জন বিজ্ঞপ্তি জারী করল। বলা হলো, ক্যা তথা সি এএ আইনের মাধ্যমে যারা ভারতবর্ষের নাগরিকত্ব অর্জন করতে চায় তাদেরকে ২০১৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বরের আগে ভারতবর্ষে এসে অন্ততঃ ৫ বছর স্থায়ীভাবে বসবাস করেছেন তার প্রমাণ পত্র দাখিল করে অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে দরখাস্ত করতে হবে। উল্লেখ্য যে, ভারতবর্ষে ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে বলা আছে:- (ক) জন্মসূত্রে (খ) উত্তরাধীকার সূত্রে (গ) বৈবাহিক সূত্রে অথবা (ঘ) ৫ বছর একটানা ভারতবর্ষের কোন রাজ্যে জাতিধর্ম নির্বিশেষে কেউ যদি বসবাস করেন ও ভারতীয় সংবিধানকে মেনে চলেন তবে তিনি দেশের নাগরিকত্ব অর্জনে সক্ষম হবেন।
কিন্তু ক্যা আইনে পরিস্কার বলা আছে, ধর্মীয় উৎপীড়নের শিকার পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বর্তমান বাংলাদেশ থেকে আগত হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান ও পাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরাই নাগরিকত্ব লাভের জন্যে আবেদন করতে পারবেন যা ভারতবর্ষেরর বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষনীতি তথা সংবিধানের মৌল নীতির পরিপন্থী। যতই বলা হোক ক্যা আইন নাগরিকত্ব দেবার, নেবার নয় মানুষ কিন্তু পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারছেনা। এই আশঙ্খা থেকেই ২০১৯ সালে ক্যা বিরোধী আন্দোলনে গোটা দেশে শতাধিক মানুষ মারা পড়ে, প্রচুর সম্পত্তি ধ্বংস হয়। নির্বাচনের প্রাকমুহুতে সবকিছু জেনে বোঝে ক্যা আইন চালুর ঘোষণা কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপি দলের রাজনৈতিক লাভালাভ যা-ই হোক না কেন নতুন করে দেশে যে একটি অশান্তির বাতাবরণ তৈরী হবে বলার অপেক্ষা রাখেনা।
ইতোমধ্যেই কেন্দ্র কর্তৃক সি এ এ আইন চালুর ঘোষণায় ত্রিপুরা, অসম, পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন
প্রান্তে অশান্তির আগুন জ্বলে ওঠেছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব আঁচ করতে পেরে অসম বিজেপি দলের মুখ্যমন্ত্রী
সর্বানন্দ সোনওয়াল ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন যে, অসমে ক্যা আইনের সুবিধা নিতে গেলে সংশ্লিষ্টদের এন,আর, সি, আইনের আওতায় আসতে হবে। উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালে এন, আর, সি, আইন চালু করতে গিয়ে ১৯ লক্ষাধিক বাঙালীকে বিদেশী চিহ্নিত করা হয় যার মধ্যে ১৩ লক্ষাধিক মানুষ হিন্দু বাঙালী। বিদেশী চিহ্নিত অনেক বাঙালীকে ডিটেনশান ক্যাম্প নামক নরকে ঠেলে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, অসমে ২৭লক্ষের মতো মানুষের মূলত: বাঙালীর অধারকার্ড বাতিল। পশ্চিমবঙ্গের সহ গোটা দেশে এখন ৩২ কোটি মানুষের আধারকার্ড ভেরিফিকেশনের নামে বাতিল করে কী বাঙালীদের গোপনে নাগরিকত্ব বাদ দেবার চক্রান্ত কাজ করে চলেছে কিনা তা নিয়ে অনেকের মনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
উল্লেখিত পরিস্থিতিতে নির্বাচনের প্রাক্লগ্নে সি এ এ তথা ক্যা আইন কার্যকরী করার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ঘোর বিরোধী আমরা বাঙালীদল। আমরা চাই ভারতের সংবিধান মেনে দেশভাগের বলি বাঙালীসহ প্রতিটি মানুষের নাগরিকত্বের নিশ্চিততার প্রদান, দেশভাগের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ও সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পূর্ন গ্যারান্টি